মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫৮ অপরাহ্ন
আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি ॥ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরে অবস্থিত শ্রীমতী মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের গাফলতির কারনে ঈদের বেতন ও বোনাস তুলতে পারেনি ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ। মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরে বেতন ও বোনাস না পেয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই বিদ্যালয়ের বিশেষ করে মুসলিম শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ।
জানাগেছে, আগৈলঝাড়া শ্রীমতী মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মোট ৩০ জন শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ১০ জন্যই মুসলিম সম্প্রদায়ের। ওই শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ ঈদ উপলক্ষে মে মাসের বেতন ও বোনাসের টাকা তোলার জন্য সোনালী ব্যাংক আগৈলঝাড়া শাখায় গেলে বেতন ভাতা ও ঈদ উৎসব ভাতা উত্তোলন সিট বিদ্যালয় কর্তৃক ব্যাংকে জমা না দেওয়ার কারনে টাকা তুলতে পারেননি তারা। যে কারনে ছেলে মেয়েসহ পরিবারের জন্য ঈদের কেনাকাটা না করতে পারায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানান, প্রধান শিক্ষকের গাফলতির কারনে প্রতি মাসেই তাদের বেতন ভাতার সিট সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে দেরিতে জমা হয়। যে করনে প্রতি মাসেই তাদের বেতন ভাতা দেরিতে তুলতে হয়। প্রতি মাসের বেতন ভাতার টাকা দেরিতে উত্তোলন করতে পারলেও ঈদের মাসে বেতন ও বোনাসের কোন টাকাই তুলতে পারেননি তারা। বেতন ভাতার সিট সোনালী ব্যংক, আগৈলঝাড়া শাখায় জমা না হওয়ায় ৩রা জুন সারাদিন বসে থেকেও বেতন ও বোনাসের টাকা না পেয়ে খালি হাতে বাড়িতে ফিরে এসেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন, আমাদের প্রধান শিক্ষকের গাফলতিতে আমরা ঈদের ও বোনাস তুলতে পারিনি। আমরা প্রধান শিক্ষকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে শ্রীমতী মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হারুনর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষক-কর্মচারীদের ঈদের বেতন ও বোনসের সিট আমি স্মাক্ষর করে ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য সহকারী প্রধান শিক্ষককে বলি। কিন্তু কেন ব্যাংকে বেতন ও বোনসের সিট জমা হয়নি তা আমার জানা নেই। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নির্মলেন্দু বাড়ৈ জানান, প্রধান শিক্ষক আমাকে বলেন বেতন ও বোনাসের সিট স্মাক্ষর করা অবস্থায় বিদ্যালয়ে রাখা আছে, কিন্তু বিদ্যালয়ে গিয়ে আমি অনেক খোঁজা-খুঁজি করেও বেতন ও বোনাসের কোন সিট পাইনি।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে অবহিত করার জন্য তাঁর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। সোনালী ব্যংক, আগৈলঝাড়া শাখার ব্যবস্থাপক পরিমল বাড়ৈ সাংবাদিকদের বলেন, প্রতি মাসেই শ্রীমতী মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা উত্তোলনের সিট দেরিতে জমা দেওয়া হয়। কিন্তু মে মাসের বেতন ভাতা ও ঈদ বোনাস উত্তোলনের সিট জমা না দেওয়ার কারনে শিক্ষক-কর্মচারীকে টাকা প্রদান করতে আমরা ব্যর্থ হই।
এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, শ্রীমতী মাতৃমঙ্গল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ও বোনাস না পাওয়ার ঘটনা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরে আমি সহকারী প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত হই। তবে এমনটা হওয়া উচিৎ নয়, গুরুত্ব সহকারে প্রধান শিক্ষকের বেতন ও বোনাসের টাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা করা উচিৎ ছিল।
Leave a Reply